বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা এখন মামুলি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু যে পরিবারের সদস্যটি মারা যায় সেই পরিবারের অপর সদস্যরাই কেবল জানেন, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা কেমন হতে পারে। সভ্যতার উৎকৃষ্টতায় মানুষ ক্রমাগত নতুন নতুন যোগাযোগ মাধ্যম আবিষ্কার করছে। সেই ঘোড়ার গাড়ির জামানা থেকে বাষ্পইঞ্জিনচালিত অটোমোবাইল জামানায় আসতে মানুষকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। ১৮৮৬ সালে সর্বপ্রথম কার্ল বেঞ্জ আধুনিক ঘরানার মোটরচালিত ওয়াগন বাজারে নিয়ে আসে। যদি প্রশ্ন করা হয়, বিশ্বের প্রথম মোটর দুর্ঘটনা ঘটে কবে, তাহলে অধিকাংশ মানুষই ১৮৮৬ সালের পরের কথা বলবেন। কিন্তু প্রথম মোটর দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে আরো অনেক আগে।
প্রথম সড়ক দুর্ঘটনা
বাষ্পইঞ্জিন আবিষ্কারের পর প্রথম মোটর দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৬৯ সালে। আর এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন মেরি ওয়ার্ড নামের এক নারী বিজ্ঞানী। সেই যুগে একজন নারীর পক্ষে বিজ্ঞানী হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সহজ ছিল না। কিন্তু মেরি জšে§ছিলেন ইউরোপের বিখ্যাত এক বিজ্ঞানী পরিবারে। এই পরিবারের জন্মানোর কারণে কিছুটা বাড়তি সুবিধা তিনি পেয়েছিলেন ইউরোপের অন্য সব নারীর তুলনায়। মেরির চাচাতো ভাই উইলিয়াম পারসনই প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেছিলেন।
তবে মেরি ছিলেন জন্মগতভাবেই একজন শিল্পী। পোকামাকড়ের ছবি নিখুঁতভাবে আঁকার জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি আর এ কাজে তিনি ব্যবহার করতেন কাঠকয়লা ও একটি আতশি কাচ। বাবার পরিচিত এক বন্ধু মেরির এই দক্ষতা দেখে অভিভূত হন। সেই বন্ধুর দেয়া একটি মাইক্রোস্কোপ মেরির দক্ষতাকে আরো একধাপ বাড়িয়ে দেয়। আরো নিখুঁতভাবে তিনি আঁকতে শুরু করেন প্রকৃতির বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের প্রতিরূপ। সেসময় লন্ডনের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতো না। তবু মেরি তার কাজগুলো জড়ো করে রয়্যাল অ্যাসট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির কাছে পাঠান তার কাজের স্বীকৃতির জন্য। যদিও মেরির কাজ দেখে সোসাইটিই সদস্যরা যারপরনাই অবাক হয়েছিলেন এবং সোসইটির খরচে মেরির একটি বই ছাপানো হয়। সেই বইটি ১৮৮০ সালে পুনরায় মুদ্রণ করা হয়।
মেরির অপর এক চাচাতো ভাইও ছিলেন একজন বিজ্ঞানী। যিনি সে সময় প্রথমদিককার বাষ্পচালিত অটোমোবাইল তৈরি করেছিলেন। ভাইয়ের আবিষ্কারে মেরিও যেন নতুনত্বের স্বাদ পেয়েছিল। তাই তো ভাইয়ের বানানো অটোমোবাইলে চড়ে খানিকটা বেড়িয়ে আসতে গেলেন তিনি। কিন্তু গাড়ি চলতে শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই গাড়ি বাঁক ঘোরার সময় উল্টে যায় এবং মেরি গাড়ির চাকার তলায় চাপা পরে তাৎক্ষণিক মারা যান। বর্তমানের গাড়ির মতো হালকা ছিল না সেসময়ের গাড়িগুলো। মেরির চাচাতো ভাইয়ের বানানো গাড়ির ওজন ছিল ১৪ টনেরও বেশি, যা বর্তমান দিনে অন্তত অটোমোবাইলের ক্ষেত্রে কল্পনাও করা যায় না।
 
How to Lose Weight at Home Top